অনলাইনে ভোটার আইডি কার্ড সংশোধন করার নিয়ম (NID Card Correction):
যদি আপনার এনআইডি কার্ড বা জাতীয় পরিচয়পত্রে নিজের নামের বানানে কোন ভুল থাকে অথবা বয়স সংশোধন করার প্রয়োজন হয় বা পিতা-মাতার নামের বানানে কোথাও ভুল থাকে কিংবা ভোটার আইডি কার্ডের ঠিকানা পরিবর্তন করার প্রয়োজন হয় তাহলে আজকের আর্টিকেলটি আপনার অনেক কাজে লাগবে।
কেননা আজকের আর্টিকেলে আমি আপনাদের দেখবো কিভাবে আপনার হাতে থাকা স্মার্টফোন দিয়ে আপনার ভোটার আইডি কার্ডের যেকোন ভুল তথ্য সংশোধন করে সঠিক করে নিতে পারবেন। সেই সাথে ভোটার আইডি কার্ড সংশোধন করতে আপনাকে কি কি কাগজপত্র (documents) আপলোড করতে হবে সেই বিষয়েও আপনাদের বিস্তারিত জানিয়ে দিবো।
আমাদের মধ্যে অনেকেই রয়েছি যাদের জাতীয় পরিচয়পত্রে বিভিন্ন ধরনের ভুল রয়েছে। এছাড়াও বর্তমানে যারা নতুন ভোটার হিসেবে নিবন্ধিত হয়েছেন তাদের জাতীয় পরিচয়পত্রেও বিভিন্ন তথ্য ভুল আসছে।
আপনিও যদি নতুন ভোটার হয়েছেন এবং আপনার ভোটার আইডি কার্ড ডাউনলোড করে নিজের নাম বা পিতামাতার নাম বা জন্ম তারিখ অথবা অন্য কোন তথ্য ভুল দেখতে পান তাহলে মাত্র এক থেকে দুই সপ্তাহের মধ্যেই অনলাইনে আবেদন করার মাধ্যমে আপনার জাতীয় পরিচয়পত্র সংশোধন করতে পারবেন।
ভোটার আইডি কার্ড সংশোধন | NID Card Correction 2023
এখন থেকে আপনার এনআইডি কার্ড সংশোধন করতে পারবেন ঘরে বসেই। অনলাইনে ভোটার আইডি কার্ড সংশোধনের প্রক্রিয়াটি অনেক সহজ। এই কাজটি আপনি মোবাইল ফোন অথবা কম্পিউটার দিয়েই করতে পারবেন।
অনলাইনে জাতীয় পরিচয়পত্র সংশোধন করার সরকারি ওয়েবসাইট services.nidw.gov.bd। সবচেয়ে প্রথমে আপনাকে এই ওয়েবসাইটে প্রবেশ করে জাতীয় পরিচয়পত্র নাম্বার, জন্ম তারিখ, ঠিকানা ইত্যাদি তথ্য প্রদান করে একটি একাউন্ট রেজিস্ট্রেশন (account registration) করতে হবে।
মোবাইল নম্বর ভেরিফিকেশন এবং ফেইস ভেরিফিকেশন প্রক্রিয়া সম্পন্ন করে একাউন্টের ড্যাশবোর্ড (dashboard) এ প্রবেশ করতে হবে।
এরপর প্রোফাইলে প্রবেশ করে ভুল তথ্য এডিট (edit) করে সঠিক করে দিতে হবে এবং সংশোধনের ফি মোবাইল ব্যাংকিং (mobile banking) সিস্টেম যেমন – বিকাশ, নগদ, রকেট ইত্যাদির মাধ্যমে পরিশোধ (pay) করতে হবে।
জাতীয় পরিচয়পত্র সংশোধনের আবেদন সাবমিট (submit) করার আগে আপনি যে তথ্য সংশোধন করতে চান তার সত্যতা প্রমাণ করার জন্য প্রয়োজনীয় কাগজপত্র অবশ্যই আপলোড (uploads) করতে হবে।
যদি আপনার আপলোড করা প্রমাণপত্রের সাথে জাতীয় পরিচয়পত্রে পরিবর্তন করা তথ্যের মিল থাকে তাহলে কিছুদিনের মধ্যে আপনার আবেদনটি অনুমোদন (approve) হয়ে যাবে এবং নির্বাচন কমিশন থেকে আপনার মোবাইলে একটি এসএমএস (SMS) পাবেন।
এরপর অনলাইনে আপনার সংশোধিত জাতীয় পরিচয়পত্র ডাউনলোড করে নিতে পারবেন।
অনলাইনে জাতীয় পরিচয়পত্র সংশোধনের নিয়ম নিচে ছবিসহ আমি আপনাদের বিস্তারিত দেখিয়ে দিবো, তার আগে চলুন জেনে নেওয়া যাক ভোটার আইডি কার্ড সংশোধন করতে কি কি লাগে এবং কত টাকা লাগে।
ভোটার আইডি কার্ড সংশোধন করতে কি কি লাগে ?
ভোটার আইডি কার্ড সংশোধন করতে যেসব সত্যায়িত ডকুমেন্টস বা কাগজপত্র আপলোড করার দরকার হবে সেগুলো হলো শিক্ষাগত যোগ্যতার সার্টিফিকেট, পাসপোর্ট, ড্রাইভিং লাইসেন্স, জন্ম নিবন্ধন সনদ, এমপিও শীট বা সার্ভিস বইয়ের কপি, বিয়ের কাবিননামা, সন্তানদের আইডি কার্ড বা পিতা-মাতার আইডি কার্ড।
আপনার NID Card Correction করার জন্য এগুলোর মধ্যে যেকোন দুইটি ডকুমেন্টস অবশ্যই আবেদনের সময় আপলোড করতে হবে। প্রয়োজনীয় কাগজপত্র জমা না দিলে আপনার আবেদনটি বাতিল হয়ে যেতে পারে।
আপনার জাতীয় পরিচয়পত্র সংশোধন করতে কি কি প্রয়োজনীয় কাগজপত্র জমা দিতে হবে তা নির্ভর করবে জাতীয় পরিচয়পত্র সংশোধনের আবেদনের ধরনের উপর।
আপনি যে ধরনের তথ্য পরিবর্তন করবেন, সেই পরিবর্তিত তথ্যের সত্যতা প্রমাণের জন্য যা যা কাগজপত্রের দরকার সেগুলো আপনাকে আপলোড করে আবেদন জমা দিতে হবে।
চলুন এই বিষয়ে নিচে এক এক করে জেনে নিই।
নিজের নাম পরিবর্তন
আপনি যদি জাতীয় পরিচয়পত্রে নিজের নামের বানান পরিবর্তন করতে চান কিংবা ভুলবশত যদি আপনার ডাকনামে ভোটার নিবন্ধিত হয়ে থাকে তাহলে তা সংশোধনের জন্য আবেদনের সাথে জমা দিতে হবে –
- এসএসসি/সমমান সার্টিফিকেট এর সত্যায়িত কপি
- বিবাহিতদের ক্ষেত্রে স্বামী/স্ত্রীর ভোটার আইডি কার্ডের সত্যায়িত কপি
- ম্যাজিস্ট্রেট কোর্টে সম্পাদিত এফিডেভিট
- জাতীয় পত্রিকায় প্রকাশিত বিজ্ঞাপনের কপি
- সন্তানদের এনআইডি কার্ডের সত্যায়িত কপি কার্ডের যেখানে পিতা/মাতার নাম শুদ্ধ আছে।
পিতা-মাতা বা স্বামীর নাম পরিবর্তন
যদি আপনার জাতীয় পরিচয়পত্রে পিতা-মাতার নাম কিংবা স্বামীর নামের বানান সংশোধন করতে চান তাহলে আপনাকে নিচে উল্লিখিত কাগজপত্র বা ডকুমেন্টস আবেদনের সাথে জমা দিতে হবে।
- এসএসসি সার্টিফিকেট
- নাগরিকত্ব সনদ
- জন্ম নিবন্ধন সনদ
- চাকুরীর প্রমাণপত্র
- পাসপোর্ট
- নিকাহনামা/কাবিননামা
- পিতা/স্বামী/মাতার ভোটার আইডি কার্ডের কপি
পিতা/মাতার নাম পরিবর্তন
জাতীয় পরিচয়পত্রে পিতা বা মাতার নাম পরিবর্তনের ক্ষেত্রে আবেদনপত্রের সাথে যেসব কাগজপত্র জমা দিতে হবে:
- এসএসসি বা এইচএসসি পরীক্ষার সার্টিফিকেট/রেজিস্ট্রেশন কার্ড
- পিতা/মাতার এনআইডি কার্ডের সত্যায়িত ফটোকপি
- পিতা/মাতা মৃত হলে অন্যান্য ভাইবোনের জাতীয় পরিচয়পত্রের সত্যায়িত ফটোকপি
- অন্য কোন গ্রহণযোগ্য কাগজের সত্যায়িত কপি
বিবাহ কিংবা বিবাহবিচ্ছেদের কারণে স্বামীর নাম সংশোধন
- বিবাহের কারণে ভোটার আইডি কার্ডে স্বামীর নাম অন্তর্ভুক্ত করতে চাইলে বিবাহের কাবিননামা জমা দিতে হবে।
- বিবাহবিচ্ছেদের কারণে আইডি কার্ড থেকে স্বামীর নাম বাদ দিতে চাইলে তালাকনামার সত্যায়িত কপি জমা দিতে হবে।
জন্ম তারিখ সংশোধন
যাদের শিক্ষাগত যোগ্যতা ন্যূনতম এসএসসি, তাদের জন্য নিচে উল্লিখিত ডকুমেন্টসগুলো আপলোড করতে হবে।
- এসএসসি/সমমান পরীক্ষার সার্টিফিকেটের সত্যায়িত ফটোকপি অবশ্যই জমা দিতে হবে
- বয়সের পার্থক্য অস্বাভাবিক না হলে প্রাপ্তি স্বীকারপত্রে উল্লেখিত তারিখে সংশোধিত পরিচয়পত্র বিতরণ করা হয়।
- বয়সের অস্বাভাবিক পরিবর্তনের ক্ষেত্রে সনদের মূল কপি প্রদর্শন কিংবা ব্যক্তিগত শুনানীতে অংশ নেয়ার প্রয়োজন হতে পারে।
যাদের শিক্ষাগত যোগ্যতা অনূর্ধ এসএসসি/সমমান তাদের জন্মতারিখ সংশোধনের জন্য জাতীয় পরিচয়পত্র ইস্যু তারিখের আগের তারিখের
- সার্ভিস বুক/এমপিওর কপি
- ড্রাইভিং লাইসেন্স
- জন্ম সনদ
- কাবিননামা
- পাসপোর্টর কপি
ইত্যাদি কাগজপত্র জমা দিতে হবে।
রক্তের গ্রুপ সংশোধন
ভোটার আইডি কার্ডে রক্তের গ্রুপ অন্তর্ভুক্ত বা সংশোধন করতে চাইলে মেডিকেল প্রতিবেদন সাবমিট করতে হবে।
ঠিকানা সংশোধন
ঠিকানা পরিবর্তনের জন্য ফরম-১৩/ফরম-১৪ এ সংশ্লিষ্ট উপজেলা/থানা নির্বাচন অফিসে আবেদন করতে হবে।
- প্রকল্প অফিসে ভোটার এলাকা পরবর্তন ছাড়া শুধু ঠিকানায় নম্বর বা বানান ভুল থাকলে তা সংশোধন করা হয়।
- পরিবারের কোন সদস্যের জাতীয় পরিচয়পত্রের কপি
- গ্যাস / বিদ্যুৎ / টলিফোন বিলের কপি / কর আদায়ের কপি
- চেয়ারম্যান / ওয়ার্ড কমিশনারের প্রত্যয়নপত্র
ইত্যাদি ডকুমেন্টস আপলোড করতে হবে।
ভোটার আইডি কার্ড সংশোধন করতে কত টাকা লাগে ?
জাতীয় পরিচয়পত্র সংশোধন বা ভোটার আইডি কার্ড সংশোধন করতে কত টাকা NID Card Correction Fee জমা দিতে হবে তা নির্ভর করে সংশোধনের ধরনের উপর।
এক্ষেত্রে সর্বনিম্ন ২৩০ টাকা এবং সর্বোচ্চ ৩৪৫ টাকা সংশোধন ফি পরিশোধ করতে হয়।
ভোটার আইডি কার্ডে ব্যক্তিগত তথ্য সংশোধনের জন্য নির্ধারিত ফি ২৩০ টাকা, অন্যান্য তথ্য সংশোধনের জন্য ১১৫ টাকা এবং ব্যক্তিগত ও অন্যান্য উভয় ধরনের তথ্য সংশোধন করার জন্য আপনাকে ৩৪৫ টাকা ফি প্রদান করতে হবে।
এছাড়া ভোটার আইডি কার্ড রিইস্যু (regular) এর জন্য ২৩০ টাকা এবং ভোটার আইডি কার্ড রিইস্যু (urgent) এর জন্য ৩৭৫ টাকা ফি প্রদান করতে হবে।
বিভিন্ন মোবাইল ব্যাংকিং সিস্টেম যেমন, bKash, Nagad, Rocket ইত্যাদি ব্যবহার করে খুব সহজেই NID Number দিয়ে আপনি জাতীয় পরিচয়পত্র সংশোধন এর ফি পরিশোধ করতে পারবেন।
ভোটার আইডি কার্ড সংশোধন করার নিয়ম – (স্টেপ বাই স্টেপ)
অনলাইনে ভোটার আইডি কার্ড সংশোধন করার প্রক্রিয়া অনেক সহজ। আপনি মোবাইল বা কম্পিউটার ব্যবহার করে সহজ কয়েকটি স্টেপ অনুসরণ করে আপনার ভোটার আইডি কার্ড সংশোধনের জন্য অনলানে আবেদন করতে পারবেন।
তবে আমি আপনাকে সাজেস্ট করবো, স্মার্টফোন দিয়ে আবেদনটি করার। কেননা এক্ষেত্রে কিছু সুবিধা রয়েছে যেগুলোর ব্যাপারে আমি পরে আপনাদের বলবো।
ভোটার আইডি কার্ডের ভুল তথ্য সংশোধন করার জন্য প্রথমে মোবাইলের একটি ব্রাউজার ওপেন করে services.nidw.gov.bd সরকারি ওয়েবসাইটে প্রবেশ করতে হবে।
এরপর রেজিস্টার করুন বাটনে ক্লিক করে আপনার NID Number বা Form Number, জন্ম তারিখ (date of birth) এবং সিকিউরিটি ক্যাপচা (captcha code) পূরণ করে সাবমিট করতে হবে।
এরপর সঠিক বর্তমান ঠিকানা এবং স্থায়ী ঠিকানা প্রদান করতে হবে। Mobile number verification এবং face verification প্রক্রিয়া সম্পন্ন করে একাউন্ট নিবন্ধন প্রসেস complete করতে হবে।
প্রোফাইল থেকে এডিট অপশনে প্রবেশ করার পর প্রয়োজনীয় তথ্য পরিবর্তন করতে হবে। এরপর সংশোধন ফি এবং সংশোধিত তথ্যের প্রয়োজনীয় সত্যায়িত কাগজপত্র আপলোড (upload) করে আবেদন সাবমিট করতে হবে।
সবশেষে আপনার এপ্লিকেশনটি পেন্ডিং দেখাবে এবং কিছুদিনের মধ্যে অনুমোদন হয়ে গেলে অনলাইন থেকে সংশোধিত জাতীয় পরিচয়পত্র download করে নিতে পারবেন।
কিভাবে আপনার ভোটার আইডি কার্ড সংশোধনের জন্য অনলাইনে আবেদন করবেন তার পুরো প্রক্রিয়াটি নিচে ধাপে ধাপে ছবিসহ আপনাদের দেখিয়ে দিবো।
আশা করি নিচের স্টেপগুলো ফলো করে খুব সহজেই আপনার Voter ID Card Correction এর জন্য অনলাইনে আবেদন করতে পারবেন।
স্টেপ ১: মোবাইলে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র / প্রমাণপত্রের ছবি তুলে রাখুন
বন্ধুরা, জাতীয় পরিচয়পত্রের কোন ধরনের তথ্য পরিবর্তন করার জন্য কী কী কাগজপত্র জমা দিতে হবে সে বিষয়ে উপরে আমি আপনাদের বলে দিয়েছি।
এখন আপনার আইডি কার্ড সংশোধনের ধরন অনুযায়ী যে যে কাগজপত্রগুলো আপনার আপলোড করতে হবে, সেগুলো আপনার মোবাইলে আগেই ছবি তুলে স্ক্যান করে নিন এবং নির্দিষ্ট একটি সাইজে crop করে নিন।
বর্তমানে বেশিরভাগ মোবাইল দিয়ে কোন ডকুমেন্টস বা কাগজপত্রের ছবি তুললে ছবিটি পরিষ্কার এবং ভালো কোয়ালিটির হয়।
কিন্তু আপনি আপনার প্রয়োজনীয় ডকুমেন্টের ছবি তুলে সেগুলো আরও পরিষ্কার করার জন্য এবং সহজে যাতে বোঝা যায় এজন্য Adobe Scan মোবাইল অ্যাপটি ব্যবহার করতে পারেন।
উদাহরণস্বরূপ, মনে করুন, আপনার জাতীয় পরিচয়পত্রে জন্ম তারিখ ভুল দেওয়া রয়েছে। এখন যদি আপনি জন্মতারিখ সংশোধন করতে চান তাহলে পরিবর্তিত জন্ম তারিখের প্রমাণপত্র হিসেবে আপনার SSC Certificate এবং জন্ম সনদ আপলোড করার প্রয়োজন হবে।
এক্ষেত্রে আপনার মোবাইলে এসএসএসি সনদ এবং জন্ম নিবন্ধন সনদের ছবি তুলে নিয়ে Adobe Scan App দিয়ে সেগুলো স্ক্যান করে নিতে পারেন।
তারপর অবশ্যই ছবির ফাইলগুলো রিনেম (rename) করে নিবেন, এক্ষেত্রে ছবিগুলাও আপলোড করতে আপনার সুবিধা হবে এবং ভুল ছবি আপলোড হওয়ার কোন সম্ভাবনা থাকবে না।
স্টেপ ২: মোবাইলে NID Wallet App ইনস্টল করুন
এখন আপনাকে মোবাইলে NID Wallet এপ্লিকেশনটি ডাউনলোড করে ইনস্টল করে নিতে হবে। গুগল প্লে স্টোরে গিয়ে “NID Wallet” লিখে সার্চ করলে অ্যাপটি আপনারা পেয়ে যাবেন। অথবা সরাসরি গুগল প্লে স্টোর থেকে অ্যাপটি ডাউনলোড করে নিতে পারেন।
স্টেপ ৩: এনআইডি (nidw) ওয়েবসাইটে নিবন্ধন করুন
আমরা প্রত্যেকেই জানি যে, যেকোন ধরনের NID Service অনলাইনের মাধ্যমে পেতে হলে আমাদের সবচেয়ে প্রথমে NID Wing ওয়েবসাইটে একটি একাউন্ট রেজিস্টার করতে হয়। একাউন্ট রেজিস্ট্রেশন হয়ে গেলে সেই একাউন্টের ড্যাশবোর্ড থেকে আমরা আমাদের দরকারি সেবাসমূহ গ্রহণ করতে পারি।
একইভাবে NID Correction এর জন্যও আপনাকে NID Website এ আগে একটি একাউন্ট বানিয়ে নিতে হবে।
কিভাবে একাউন্ট তৈরি করবেন তা নিচে ধাপে ধাপে দেখে নিন।
এন আইডি ওয়েবসাইটে প্রবেশ করে আইডি কার্ডের তথ্য প্রদান করুন
প্রথমে আপনাদের এই লিংকে প্রবেশ করতে হবে এবং রেজিস্টার করুন বাটনে ক্লিক করতে হবে।
এরপর আপনার ভোটার আইডি নম্বর, জন্ম তারিখ এবং সিকিউরিটি ক্যাপচা পূরণ করে সাবমিট বাটনে ক্লিক করুন।
এক্ষেত্রে যদি আপনার ভোটার আইডি কার্ডের নম্বর জানা না থাকে তাহলে ভোটার স্লিপ নম্বর বা ফর্ম নম্বরটি ব্যবহার করে একাউন্ট তৈরি করতে পারেন।
ঠিকানা দিন
আইডি কার্ডের তথ্য সাবমিট করার পর এই ধাপে আপনার বর্তমান ঠিকানা এবং স্থায়ী ঠিকানা দিতে হবে।
মনে রাখবেন, আপনার ভোটার নিবন্ধনের সময় যে বর্তমান ঠিকানা এবং স্থায়ী ঠিকানা দিয়েছেন, সেই ঠিকানা এখানে সিলেক্ট করতে হবে।
ঠিকানা যাচাই হয়ে গেলে পরবর্তী বাটনে ক্লিক করুন।
Mobile number verification
এখন আপনাকে মোবাইল নাম্বার ভেরিফিকেশন করতে হবে। এখানে আপনার বর্তমান ব্যবহূত একটি মোবাইল নাম্বার দিতে পারেন। এছাড়া আপনার বিশ্বস্ত কারও মোবাইল নাম্বার এখানে দিয়ে বার্তা পাঠান এ ক্লিক করুন।
সাথে সাথে আপনার মোবাইল নাম্বারে ছয় সংখ্যার একটি ওটিপি কোড পাঠানো হবে। এখানে থাকা বক্সটিতে ছয় সংখ্যার যাচাইকরণ কোডটি বসিয়ে দিতে হবে এবং অবশ্যই ৫০ সেকেন্ডের মধ্যে বসাতে হবে৷ তারপর বহাল এ ক্লিক করবেন।
Face verification
এই ধাপে NID Wallet App দিয়ে আপনাকে ফেইস ভেরিফিকেশন প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে হবে।
আপনি যদি কম্পিউটার ব্যবহার করে এনআইডি কার্ড সংশোধনের আবেদন করে থাকেন, তাহলে আপনি এই স্টেপে কম্পিউটার স্ক্রিনে একটি QR Code দেখতে পাবেন, এই QR কোডটি আপনার মোবাইলে ইনস্টল করা এনআইডি ওয়ালেট অ্যাপের মাধ্যমে স্ক্যান করে নিতে হবে।
কিউআর কোড স্ক্যান হয়ে গেলে NID Wallet অ্যাপে ফেইস স্ক্যান শুরু হবে। এখানে যে ব্যক্তির এনআইডি কার্ডের তথ্য সংশোধনের আবেদন করতে চাচ্ছেন, সেই ব্যক্তির মুখমন্ডল স্ক্যান করতে হবে।
ফেইস স্ক্যান প্রক্রিয়া সম্পন্ন করার জন্য ব্যক্তির মুখমণ্ডল যথাক্রমে সামনে, ডানে এবং বামে ঘুরাতে হবে। এছাড়া face scan screen এর নিচে প্রয়োজনীয় নির্দেশনা আপনি দেখতে পাবেন।
ফেইস স্ক্যান প্রক্রিয়া সঠিকভাবে শেষ হলে Ok / ঠিক আছে বাটন দেখতে পাবেন, সেখানে ক্লিক করতে হবে।
আর আপনি যদি মোবাইল দিয়ে কাজটি করে থাকেন, তাহলে সরাসরি আপনি QR Code নাও পেতে পারেন। এক্ষেত্রে নিচের মতো একটি লাল কালারের বাটন দেখতে পাবেন।
এই বাটনটিতে ক্লিক করলে আপনাকে সরাসরি এনআইডি ওয়ালেট অ্যাপে নিয়ে যাওয়া হবে এবং সেখানে ফেইস স্ক্যান করতে পারবেন।
পাসওয়ার্ড সেট করুন এবং প্রোফাইলে প্রবেশ করুন
এভাবে face verification করার পর আবার আপনাকে ব্রাউজারে প্রবেশ করতে হবে এবং পেজটি reload / refresh করতে হবে।
এরপর আপনাকে পাসওয়ার্ড সেট করার অপশন দেওয়া হবে৷ এখানে আপনি নিজের এনআইডি একাউন্টে পছন্দমতো পাসওয়ার্ড সেট করে নিতে পারেন, আবার পাসওয়ার্ড সেট করতে না চাইলে এড়িয়ে যান বাটনে ক্লিক করে পেজটি এড়িয়ে যেতে পারেন।
তবে এখানে পাসওয়ার্ড সেট করার একটা বড় সুবিধা হলো, আপনি যদি পরবর্তীতে আবার এনআইডি একাউন্টে প্রবেশ করতে চান, তাহলে নতুন করে আর মোবাইল এবং ফেইস ভেরিফিকেশন করতে হবেনা, শুধুমাত্র আপনার ভোটার আইডি নাম্বার এবং পাসওয়ার্ড দিয়ে আপনার এনআইডি একাউন্টে লগিন করতে পারবেন।
স্টেপ ৪: ভোটার আইডি কার্ডের তথ্য সংশোধন করুন
উপরে দেখনো পদ্ধতি অনুসারে যদি আপনি সফলভাবে রেজিস্ট্রেশন করে থাকেন তাহলে এখন আপনাকে সরাসরি services.nidw.gov.bd ওয়েবসাইটের dashboard -এ নিয়ে যাওয়া হবে।
এখানে আপনি নিজের ছবিসহ বিস্তারিত ডিটেইলস দেখতে পাবেন। তবে নিচে আরও কয়েকটি অপশন আপনি দেখতে পারবেন। যেহেতু আমরা তথ্য সংশোধন করবো তাই এগুলো থেকে প্রোফাইল (প্রোফাইল দেখুন / পরিবর্তন করুন) অপশনটিতে ট্যাপ করতে হবে।
প্রোফাইলে যাওয়ার পর আপনার সমস্ত ইনফরমেশন বাংলায় এবং ইংরেজিতে দেখতে পাবেন। এখন আপনি যদি এই ইনফরমেশনগুলো এডিট বা পরিবর্তন বা সংশোধন করতে চান তাহলে উপর থেকে এডিট বাটনটিতে ক্লিক করতে হবে৷
এরপর যে ইন্টারফেসটি আসবে এখানে ফিস/চার্জ সম্পর্কে আপনাকে জানিয়ে দেওয়া হবে।
এখানে এরকম লেখা থাকবে, “আপনি যদি জাতীয় পরিচয়পত্র সংশোধন করতে চান বা পূনরায় পেতে চান তাহলে সে ক্ষেত্রে আপনাকে নির্দিষ্ট পরিমাণ ফি প্রদান করতে হবে। সংশোধন বা পূনরায় পেতে ফি এর পরিমাণ এই লিংক https://services.nidw.gov.bd/nid-pub/fees এর মাধ্যমে জানা যাবে”।
তো এখান থেকে নিচের দিকে বহাল বাটনটিতে আপনাকে ক্লিক করতে হবে। বহাল এ ক্লিক করার পর আপনি আপনার ভোটার আইডি কার্ডের বিভিন্ন তথ্য পরিবর্তন / এডিট করার সুযোগ পাবেন।
এখানে একটি কথা বলে রাখি, অনেকেই এরকমটা মনে করে থাকেন যে, নাম পরিবর্তন, বয়স পরিবর্তন, পিতা-মাতার নাম পরিবর্তন বা রক্তের গ্রুপ পরিবর্তন এই ধরনের অনেক তথ্য যেগুলো সংশোধন করার দরকার এজন্য প্রত্যেকটির ক্ষেত্রে হয়তোবা আলাদা আলাদাভাবে আবেদন করতে হয়।
কিন্তু প্রকৃতপক্ষে আপনি একবার ভোটার আইডি কার্ড সংশোধনের আবেদন করার সময়ই একসাথে একাধিক তথ্য সংশোধনের জন্য আবেদন করতে পারবেন।
বন্ধুরা, জাতীয় পরিচয়পত্র সংশোধনের প্রধানত তিনটি ক্যাটাগরি রয়েছে। এগুলো হলো:
- ব্যক্তিগত তথ্য সংশোধন
- অন্যান্য তথ্য সংশোধন এবং
- ঠিকানা পরিবর্তন।
ব্যক্তিগত তথ্য সংশোধন
ব্যক্তিগত তথ্য ক্যাটাগরিতে আপনি যেসকল তথ্য পরিবর্তন / সংশোধন করতে পারবেন সেগুলো নিচে উল্লেখ করা হলো।
- নিজের নাম (বাংলায়)
- নিজের নাম (ইংরেজিতে)
- জন্ম তারিখ
- জন্ম নিবন্ধন নম্বর
- রক্তের গ্রুপ
- লিঙ্গ
- পিতার নাম (বাংলায়)
- পিতার এনআইডি নাম্বার
- মাতার নাম (বাংলায়)
- মাতার এনআইডি নাম্বার
এগুলোর মধ্যে আপনি যে তথ্যটি সংশোধন বা change করতে চান তার বাম পাশের টিক অপশনে ক্লিক করতে হবে।
টিকমার্ক দেওয়ার পর বক্সের ভিতর থাকা ভুল তথ্য পরিবর্তন করে সঠিকভাবে টাইপ করতে হবে। (পরিবর্তিত তথ্য অবশ্যই প্রমাণপত্র / সত্যায়িত কাগজপত্রের সাথে মিল থাকতে হবে)
এভাবে যে কয়টি তথ্য আপনার সংশোধন করা দরকার, সেগুলোর বাম পাশে টিকমার্ক দিয়ে সংশোধন করে নিবেন। সংশোধন হয়ে গেলে স্ক্রল করে একেবারে উপরের দিকে চলে আসবেন এবং পরবর্তী বাটনে ক্লিক করবেন।
স্টেপ ৫: সংশোধিত তথ্য যাচাই করে নিন
পরবর্তীতে যাওয়ার পর আপনি পরিবর্তনের একটি পেজ দেখতে পারবেন। আপনি যে তথ্যগুলো সংশোধন করেছেন সেগুলো আগে কি ছিলো এবং পরিবর্তন করে আপনি বর্তমানে কি দিয়েছেন তার একটি তালিকা বা সামারি দেখতে পাবেন।
মনে রাখবেন, এখানে অবশ্যই ভালোভাবে দেখে নিতে হবে আপনার পরিবর্তন করা তথ্য সঠিক আছে কিনা। কারণ একবার পরিবর্তন করা তথ্য আপনি পরবর্তীতে আর সংশোধনের সুযোগ পাবেন না। এই বিষয়টি ভালোভাবে যাচাই করে আবার পরবর্তী বাটনে ক্লিক করুন।
স্টেপ ৫: ট্রানজেকশন
এবারে আপনি ট্রানজেকশন এর একটি পেজ দেখতে পাবেন। You have total deposit of 0 BDT এই লেখাটি এখানে দেখাবে। অর্থাৎ আপনি এখন পর্যন্ত কোন ফি প্রদান করেননি।
এখন আপনাকে টাকা ডিপোজিট করতে হবে। যেটা আপনারা বিকাশ, রকেট, নগদ ইত্যাদি মোবাইল ব্যাংকিং এর মাধ্যমে করতে পারবেন।
জাতীয় পরিচয়পত্র সংশোধন ফি কিন্তু সংশোধনের ধরন অনুসারে ভিন্ন ভিন্ন হয়ে থাকে। তো টাকা কিভাবে ডিপোজিট করবেন সেটা আমি এখন আপনাদের দেখাবো।
বিকাশের মাধ্যমে ভোটার আইডি কার্ড সংশোধন ফি জমা দেওয়ার নিয়ম জেনেনিন
জাতীয় পরিচয়পত্র সংশোধন ফি আপনারা যেকোন মোবাইল ব্যাংকিং একাউন্ট ব্যবহার করে পরিশোধ করতে পারেন। তবে বাংলাদেশের প্রত্যেক মানুষের কাছে বিকাশ একাউন্ট থাকায় বিকাশ মোবাইল ব্যাংকিং অধিক জনপ্রিয়।
তাই বিকাশের মাধ্যমে NID Correction Fee জমা দেওয়ার নিয়ম নিচে স্টেপ বাই স্টেপ আপনাদের জানিয়ে দিয়েছি।
- আপনার মোবাইলে বিকাশ অ্যাপ ওপেন করে বিকাশ একাউন্টে লগিন করুন।
- বিকাশ হোম থেকে পে বিল অপশনে চলে যান।
- সরকারি ফি অপশনে ক্লিক করুন। NID Service (সরকারি ফি) সিলেক্ট করুন।
- আবেদনের ধরন সিলেক্ট করুন। আপনি যদি ব্যক্তিগত তথ্য সংশোধন করছেন তাহলে NID Info Correction অপশনটি বাছাই করুন।
- এনআইডি নম্বর অপশনে আপনার NID Number টাইপ করুন।
- “পে বিল করতে এগয়ে যান” বাটনে ক্লিক করুন।
এরপর অটোমেটিকভাবে আপনার টাকার পরিমাণ দেখাবে যে আসলে কত টাকা আপনাকে পেমেন্ট করতে হবে।
এখন আপনার বিকাশে যদি পর্যাপ্ত ব্যালেন্স থাকে তাহলে নিচে “পরের ধাপে যেতে ট্যাপ করুন” এ ক্লিক করুন। আপনার বিকাশ পিন দিন। PIN দেওয়ার পর নিচে লাল অংশে ট্যাপ করে ধরে রাখলে আপনার পেমেন্ট করা হয়ে যাবে।
বিকাশ একাউন্ট না থাকলে কি করবেন ?
এখন অনেকেই বলতে পারেন যে, আমার তো বিকাশ একাউন্ট নেই, আমি এই কাজটুকু কিভাবে করবো?
চিন্তার কোন কারণ নেই। আপনার নিকটবর্তী কোন বিকাশের দোকানে গিয়ে এনআইডি নাম্বারটি দিলে তারা আপনার এনআইডি সংশোধন ফি এভাবে পেমেন্ট করে দিতে পারবে।
ব্যাস, আপনার টাকা ডিপোজিট হয়ে গেছে। এখন আবার ব্রাউজারে চলে যান এবং ট্রানজেকশন এর পেজটি একবার রিলোড বা রিফ্রেশ করুন। অর্থাৎ উপরের দিক থেকে টেনে নিচের দিকে ছেড়ে দিন।
এবারে পেজটি রিফ্রেশ হয়ে গেলে “আপনার একটি ড্রাফট এপ্লিকেশন রয়েছে” এরকম একটি নোটিফিকেশনে দেখতে পাবেন।
স্টেপ ৭: প্রয়োজনীয় ডকুমেন্টস বা কাগজপত্র আপলোড করুন
ডকুমেন্টস জমা দেওয়ার জন্য নিচের স্টেপগুলো অনুসরণ করুন।
- প্রোফাইল থেকে আগের মতো এডিট বাটনে ক্লিক করুন।
- যে অংশটি সংশোধন করতে চাচ্ছেন সেই অংশটিতে আবার আগের মতো টিকমার্ক দিন। পরবর্তী বাটনে ক্লিক করুন।
- আগের মতো আবার পরিবর্তিত তথ্যের সামারি দেখতে পাবেন। আবার পরবর্তী বাটনে ক্লিক করুন।
- এখন আবার ট্রানজেকশন এর পেজটি দেখতে পাবেন। এখানে আপনার জমা দেওয়া টাকার পরিমাণ উল্লেখ থাকবে। (এখানে আর 0 BDT দেখাবে না)
- এরপর নিচে থেকে বিতরনের ধরন সিলেক্ট করুন।
- আপনি যদি লেমিনেটিং করা আইডি কার্ড কার্ড ব্যবহার করে থাকেন, তাহলে Regular বাছাই করুন। আর আপনি স্মার্ট কার্ডের তথ্য সংশোধন করতে চান তাহলে Regular Smart Card সিলেক্ট করুন। এরপর পরবর্তীতে চলে যান।
এবার আপনাকে কাগজপত্র সাবমিট করতে বলা হবে।
- এখন যে যে কাগজপত্রগুলো আপনি আপলোড করতে চান, ড্রপডাউন মেনুতে ক্লিক করে সেগুলো সিলেক্ট করুন এবং আপলোড বাটনে ক্লিক করে আপলোড করুন।
- এবার পরবর্তী বাটনে ক্লিক করুন।
- তারপরের ধাপে আপনার সংশোধিত তথ্য এবং কি কি কাগজপত্র আপনি আপলোড করেছেন সেগুলো দেখতে পাবেন। এখান থেকে সাবমিট বাটনে ক্লিক করতে হবে।
স্টেপ ৮: আবেদন ফরম ডাউনলোড করুন
সাবমিট করার পর ডাউনলোড বাটনে ক্লিক করুন।
এরপর পিডিএফ আকারে একটি এপ্লিকেশন আসবে। যেটা মোবাইল বা কম্পিউটারে সেভ করে নিতে হবে। সেভ করা পিডিএফ ফাইলটি আপনি কোন একটি কম্পিউটারের দোকানে গিয়ে প্রিন্ট করে নিবেন।
এরপর আবেদনপত্রটি আপনার কাছে সংরক্ষণ করে রাখবেন। যেটা পরবর্তীতে নির্বাচন কমিশন অফিস থেকে সংশোধিত ভোটার আইডি কার্ড সংগ্রহ করার সময় আপনাকে নিয়ে যেতে হবে।
তো এই ছিলো অনলাইনে ভোটার আইডি কার্ড সংশোধনের জন্য আবেদনের প্রক্রিয়া। NID Card Correction এর সাথে জড়িত আরও কিছু বিষয়ে নিচে জেনেনিন।
ভোটার আইডি কার্ড সংশোধন করতে কত দিন লাগে?
বন্ধুরা, জাতীয় পরিচয়পত্র সংশোধনের আবেদন করার পর এনআইডি ওয়েবসাইটে “আপনার একটি এপ্লিকেশন পেন্ডিং এ রয়েছে” এরকম একটি নোটিফিকেশন আপনি দেখতে পারবেন।
কারণ, আপনার আবেদনটি কিন্তু নির্বাচন কমিশনের কর্মকর্তারা যাচাই-বাছাই করে দেখবে। যদি আপনার চাহিত সংশোধিত তথ্যের সাথে প্রমাণপত্রের মিল থাকে এবং আপনি যথাযথ প্রমাণপত্র আপলোড করে থাকেন তাহলে তারা আবেদন অনুমোদন করে দিবে এবং আপনার ভুল তথ্য সংশোধন করে দিবে।
তাদের যাচাই বাছাইয়ের প্রসেসটি সম্পন্ন হতে কিছুদিন টাইম অবশ্যই লাগবে। এরপর আপনার এপ্লিকেশনটি অনুমোদন হয়ে গেলে আপনার মোবাইলে একটি এসএমএস পাঠানো হবে এবং আপনার সংশোধিত জাতীয় পরিচয়পত্র ডাউনলোড করে নিতে পারবেন।
তবে জাতীয় পরিচয়পত্র বা ভোটার আইডি কার্ড সংশোধন করতে সর্বোচ্চ দুই মাস বা ৬০ দিন সময় লেগে থাকে। অনলাইনে উপযুক্ত ডকুমেন্টস আপলোড করে সঠিকভাবে আবেদন করার পর ৩০ দিনের মধ্যেই আবেদন অনুমোদন হয়ে যায়।
NID সংশোধনের অবেদন অনুমোদন হতে কত দিন লাগে এই বিষয়ে বিস্তারিত জানতে আমাদের আগের আর্টিকেলটি পড়তে পারেন।
সংশোধিত আইডি কার্ড ডাউনলোড করুন
আপনি যদি উপযুক্ত documents জমা দেওয়ার মাধ্যমে আপনার NID Card Correction Application করেছেন তাহলে সর্বোচ্চ ৪৫ দিনের মধ্যের আপনার মোবাইলে SMS পেয়ে যাবেন।
আর আবেদন অনুমোদনের এসএমএস পাওয়ার পর আপনি এনআইডি ওয়েবসাইট থেকে সংশোধিত জাতীয় পরিচয়পত্র ডাউনলোড করে লেমেনেটিং করে নিয়ে ব্যবহার করতে পারবেন অথবা নির্বাচন কমিশন অফিস থেকে আপনার সংশোধিত ভোটার আইডি কার্ড সংগ্রহ করতে পারবেন।
যখন নির্বাচন কমিশনে আইডি কার্ড নিতে যাবেন তখন অবশ্যই আপনার বর্তমান আইডি কার্ড এবং সংশোধনের আবেদন করার পর প্রিন্ট করা আবেদন পত্র সাথে করে নিয়ে যাবেন।
আর অনলাইন থেকে সংশোধিত জাতীয় পরিচয়পত্র ডাউনলোড করে নেওয়ার জন্য আপনাকে এনআইডি ওয়েবসাইটে পূর্বের নিয়মে লগিন করে নিতে হবে।
এরপর ড্যাশবোর্ডে ডাউনলোড অপশন পেয়ে যাবেন। এখানে ক্লিক করে আপনার সংশোধিত ভোটার আইডি কার্ড অনলাইন থেকে ডাউনলোড করতে পারবেন।
ভোটার আইডি কার্ড জন্ম তারিখ সংশোধন
জাতীয় পরিচয়পত্রের জন্ম তারিখ পরিবর্তন করতে চাইলে প্রথমে এনআইডি ওয়েবসাইটে লগিন করুন। এরপর ড্যাশবোর্ডের প্রোফাইল অপশনে গিয়ে এডিট বাটনে ক্লিক করে জন্ম তারিখের ঘরে টিক মার্ক দিয়ে আপনার চাহিত জন্মতারিখ লিখুন।
সংশোধন ফি পরিশোধ করে উপযুক্ত প্রমাণপত্র আপলোড করে আপনার এপ্লিকেশন সাবমিট করুন। জন্ম তারিখ সংশোধন করার জন্য যদি আপনি SSC, HSC এবং JSC Board Certificate প্রমাণপত্র হিসেবে আপলোড করেন তাহলে আপনার আবেদনটি অবশ্যই অনুমোদন হবে।
এছাড়াও আপনি পাসপোর্ট কিংবা ড্রাইভিং লাইসেন্সওআপলোড করতে পারেন যেখানে আপনার সঠিক জন্ম তারিখ আছে।
তবে যে ডকুমেন্টই প্রমাণ হিসেবে আপলোড করেন না কেন, আপনার সংশোধন আবেদনের সাথে ডকুমেন্টের অবশ্যই মিল থাকতে হবে।
উদাহরণস্বরূপ, ধরুন আপনার আইডি কার্ডে জন্ম তারিখ আছে 15 October 2002। এখন আপনি এটা পরিবর্তন করে 15 October 2000 করতে চাচ্ছেন। তাহলে আপনি যেসব প্রমাণপত্র সাবমিট করবেন সেগুলোতে জন্ম তারিখ অবশ্যই 15 October 2000 থাকতে হবে। তাছাড়া আপনার আবেদনটি বাতিল হয়ে যাবে।
ভোটার আইডি কার্ড সংশোধন সম্পর্কিত প্রশ্ন উত্তর
জাতীয় পরিচয় পত্র সংশোধন রিলেটেড সাধারণ জিজ্ঞাসিত কিছু প্রশ্নের উত্তর নিচে আলোচনা করা হলো।
NID Correction এর পুরো প্রসেসটি সম্পন্ন হতে কতদিন সময় লাগতে পারে এটা মূলত সংশোধনের ধরন ও ক্যাটাগরির উপর নির্ভর করে। ভোটার আইডি কার্ড সংশোধন অনুমোদন পেতে সাধারণত ২১ থেকে ৪৫ দিন সময় লাগে। উপযুক্ত প্রমাণপত্র আবেদনের সাথে আপলোড করলে ১৫ থেকে ২১ দিনের মধ্যেই তথ্য সংশোধন হয়ে যায়।
ভোটার আইডি কার্ডের নাম সংশোধন করতে ২৩০ টাকা ফি দিতে হয়।
আইডি কার্ড কতবার সংশোধন করা যাবে সে সম্পর্কিত তথ্য এখনো জানা যায়নি। তবে একটি তথ্য কেবল একবার পরিবর্তনের আবেদন করা যাবে। প্রথমবার সংশোধনের জন্য ২৩০ টাকা, দ্বিতীয় বার (একবার যা সংশোধন হয়েছে তা ব্যতীত) ৩৪৫ টাকা এবং এরপর প্রতিবার ৪৬০ টাকা করে ফি প্রদান করতে হবে।
এনআইডি কার্ডের ব্যক্তিগত তথ্য সংশোধন ফি ২৩০ টাকা, অন্যান্য তথ্য সংশোধন ১১৫ টাকা এবং উভয় তথ্য সংশোধন ফি ৩৪৫ টাকা।
অনলাইনে আইডি কার্ড সংশোধনের জন্য প্রথমে এনআইডি ওয়েবসাইটে নিবন্ধন করতে হবে। ড্যাশবোর্ড থেকে প্রোফাইলে প্রবেশ করার পর এডিট অপশনে গিয়ে প্রয়োজনীয় তথ্য পরিবর্তন করতে হবে। তারপর সংশোধন ফি জমা দিয়ে উপযুক্ত কাগজপত্র আপলোড করে আবেদন জমা দিতে হবে। সবশেষে আবেদনপত্র প্রিন্ট করে নিতে হবে।
ভোটার আইডি কার্ড সংশোধন করতে সাধারণত দরকার হয়, শিক্ষাগত যোগ্যতার সনদ, পাসপোর্ট, ড্রাইভিং লাইসেন্স, ডিজিটাল জন্ম নিবন্ধন সনদ, এমপিও শীট বা সার্ভিস বইয়ের কপি, বিয়ের কাবিননামা ইত্যাদি।
এনআইডি কার্ডে blood group থাকা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। কেননা জরুরি মূহুর্তে আইডি কার্ড দেখলেই ব্লাড গ্রুপ সম্পর্কে জানা যায়। আইডি কার্ডে রক্তের গ্রুপ যুক্ত বা পরিবর্তন করতে সংশোধনের আবেদনের সাথে Blood group Test Report আপলোড করতে হবে।
Also Read –